দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত শাহবাগ আন্দোলনের অন্যতম ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার শোভনকে নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত 'সাম্প্রদায়িক ও উস্কানিমূলক' সংবাদ কপি করে বিতরণের দায়ে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মিজানুর রহমান ভুঞার বিরুদ্ধে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠন করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করা হয়েছে জাতীয় সংসদে। একই দাবি জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ আইনজীবীরাও। সচেতন মানুষও সর্বোচ্চ আদালতের একজন বিচারকের এহেন কাজে স্তম্ভিত।
সংসদে মহাজোটের সাংসদরা বলেছেন, বিচারপতির মতো পদে থেকে তিনি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। এমন কর্মকাণ্ড অনৈতিক ও নিন্দনীয়। সংসদ সদস্যদের এমন ক্ষোভের প্রেক্ষাপটে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আলোচনাসাপেক্ষে এ ব্যাপারে সংবিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ। এর আগে স্পিকার অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ অ্যাডভোকেট বলেন, এই যদি
বিচারপতির অবস্থা হয়, তাহলে দেশের মানুষ যাবে কোথায়। এ বিষয়ে আইনমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে স্পিকার বলেন, এর একটা সুরাহা বা সমাধান হওয়া উচিত। অন্যতায় তিনি রুলিং দেবেন।
রাজীব হত্যার পর তার ভুয়া আইডি ব্যবহার করে ব্লগে মহানবী (সা.) সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়, যা কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হলে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. মিজানুর রহমান ভুঞা আদালতের কাগজ, প্রিন্টার ও খাম ব্যবহার করে প্রধান বিচারপতিসহ শতাধিক বিচারপতির কাছে পাঠান। এ সংবাদ গতকাল সমকালসহ কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
স্পিকার অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদের সভাপতিত্বে মঙ্গলবার বিকেলে অধিবেশন শুরুর পর পরই জাতীয় পার্টির সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর নিয়ে সমকালসহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত বিচারপতির এমন গুরুতর আপত্তিজনক কাজের প্রতি সংসদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং সমকালে প্রকাশিত এই সংবাদটি পুরোপুরি সংসদকে পাঠ করে শোনান। একই বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সরকারি দলের প্রধান হুইপ আবদুস শহীদ, আবদুল মান্নান ও অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া বক্তব্য রাখেন। তারা সবাই বিচারপতি মিজানুর রহমান ভুঞার কঠোর সমালোচনা করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে বলেন, সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠন করতে হবে। অন্যথায় দেশের বিচার বিভাগকে রক্ষা করা সম্ভব হবে না।
শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, বিচারপতি তার দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন না থেকে রাজনৈতিক দলের কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন। জামায়াতের পক্ষ নিয়ে তিনি ব্লগার রাজীবকে মুরতাদ বলেছেন। তিনি বলেন, রাজীব হত্যায় ওই বিচারপতি জড়িত কি-না জানার জন্য তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। রাজীবের মৃত্যুর পর তার আইডি হ্যাক করে মারাত্মক সব অপপ্রচার চালানো হয়েছে। এই বিচারপতি তাদের হয়ে কাজ করেছেন। শাহবাগের আন্দোলনকে নস্যাৎ ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগাতে এসব প্রচারণা চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, এই বিচারপতি সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। তাকে অপসারণ করতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আলোচনা করে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠনের জন্য তিনি আইনমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান।
আবদুস শহীদ বলেন, বিচারপতি মিজানুর রহমান ভুঞা ধৃষ্টতাপূর্ণ কাজ করেছেন। আজ সংসদে যে দাবি উঠেছে, সংসদীয় পদ্ধতি অনুসরণ করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়াও সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠনের দাবি জানিয়ে বলেন, এ ঘটনা বিচার বিভাগের জন্য কলঙ্কজনক ঘটনা। একজনের কুকর্মের জন্য বিচার বিভাগ নষ্ট হতে পারে না।
আবদুল মান্নান বলেন, স্বাধীনতার চেতনায় উজ্জীবিত ও নৃশংসভাবে খুন হওয়া একজন যুবকের বিরুদ্ধে মহানবীকে (সা.) জড়িয়ে কুৎসিত মন্তব্য করা হয়েছে। এতে দেশের সাধারণ সরলপ্রাণ মুসলমানের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই বিচারপতি রাজনৈতিকভাবে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে নিয়োগ পেয়েছেন। নিজের চেয়ারকে ব্যবহার করে তিনি ক্ষমার অযোগ্য কাজ করেছেন। তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে।
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, সংগ্রামসহ কয়েকটি জামায়াত সমর্থিত পত্রিকায় রাজীবকে জড়িয়ে মহানবীর (সা.) বিরুদ্ধে কুৎসা রটানোর এই বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে। একজন কর্তব্যরত বিচারপতি এ প্রচারণার কাজে যুক্ত হয়ে অন্যায় ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি। তিনি ১৯৭২ সালের সংবিধানের মতো বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নেওয়ারও দাবি করেন।
আইনমন্ত্রীর আশ্বাস : সাংসদদের দাবি প্রসঙ্গে সংসদে আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, রাজীবকে বিতর্কিত করতে ইনকিলাব ও আমার দেশসহ কয়েকটি পত্রিকায় এই অপপ্রচার চালানো হয়েছে। এই পত্রিকাগুলোর ভূমিকা সম্পর্কে আমরা জানি। তারা নিজেরাও তৈরি খবর প্রকাশ করতে পারে। রাজীব এমন কাজ করতে পারে না। তিনি বলেন, একজন বিচারপতি হয়ে তিনি যে কাজ করেছেন, তা জঘন্য ও নিন্দনীয়। তিনি অসদাচরণ করেছেন। রাষ্ট্রপতির ক্ষমতানুযায়ী তিনি প্রধান বিচারপতিকে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠন করতে বলতে পারেন। আইনমন্ত্রী বলেন, তিনি বিষয়টি প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আলোচনা করে সংবিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।
আইনজীবীদের ক্ষোভ : এদিকে গতকাল দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের দক্ষিণ হলে আয়োজিত এক জরুরি সাধারণ সভায়ও বিচারপতি মো. মিজানুর রহমান ভুঞার বিরুদ্ধে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠন করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ব্যানারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সহ-সভাপতি কেএম সাইফুদ্দিন আহম্মেদ। বক্তব্য রাখেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল বাসেত মজুমদার, এএফএম মেসবাহউদ্দিন আহমেদ, বঙ্গবন্ধু হত্যা ও জেলহত্যা মামলার প্রধান আইনজীবী আনিসুল হক, সমিতির সাবেক সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম, সমিতির সাবেক সহসম্পাদক সৈয়দ মামুন মাহবুব প্রমূখ।
সভায় অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলে তিনি আর কোনো দলের থাকেন না। যারা পদে আসীন হয়ে দলের প্রতি আনুগত্য দেখান, তাদের বিচারপতি পদে থাকার অধিকার নেই। তিনি অবিলম্বে পদ ছেড়ে দিলে বিচার বিভাগ বাঁচবে।
এএফএম মেসবাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, তার আর ওই পদে থাকার যোগ্যতা নেই। অভিযুক্ত বিচারপতির বিরুদ্ধে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠনের পর নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আইনজীবীদের তার কোর্ট বর্জন করতে হবে।
অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেন, ওই বিচারক স্বাধীন বিচার বিভাগকে কলুষিত করার জন্য জঘন্য কাজ করেছেন।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, বিচারপতি মিজানুর রহমান ভুঞার বিরুদ্ধে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠন করে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এর আগে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার একেএম শামসুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে প্রধান বিচারপতি ওই বিচারপতিকে (মিজানুর রহমান ভুঞা) সোমবার রাতেই তলব করেছিলেন। পরে তিনি প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বলেও জানান সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার।
মো. মিজানুর রহমান ভুঞা ২০০২ সালে বিএনপি-জামায়াত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে হাইকোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। এর দুই বছর পর ২০০৪ সালের ২৯ জুলাই তিনি বিচারপতি হিসেবে স্থায়ী নিয়োগ লাভ করেন। —
সংসদে মহাজোটের সাংসদরা বলেছেন, বিচারপতির মতো পদে থেকে তিনি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। এমন কর্মকাণ্ড অনৈতিক ও নিন্দনীয়। সংসদ সদস্যদের এমন ক্ষোভের প্রেক্ষাপটে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আলোচনাসাপেক্ষে এ ব্যাপারে সংবিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ। এর আগে স্পিকার অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ অ্যাডভোকেট বলেন, এই যদি
বিচারপতির অবস্থা হয়, তাহলে দেশের মানুষ যাবে কোথায়। এ বিষয়ে আইনমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে স্পিকার বলেন, এর একটা সুরাহা বা সমাধান হওয়া উচিত। অন্যতায় তিনি রুলিং দেবেন।
রাজীব হত্যার পর তার ভুয়া আইডি ব্যবহার করে ব্লগে মহানবী (সা.) সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়, যা কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হলে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. মিজানুর রহমান ভুঞা আদালতের কাগজ, প্রিন্টার ও খাম ব্যবহার করে প্রধান বিচারপতিসহ শতাধিক বিচারপতির কাছে পাঠান। এ সংবাদ গতকাল সমকালসহ কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
স্পিকার অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদের সভাপতিত্বে মঙ্গলবার বিকেলে অধিবেশন শুরুর পর পরই জাতীয় পার্টির সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর নিয়ে সমকালসহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত বিচারপতির এমন গুরুতর আপত্তিজনক কাজের প্রতি সংসদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং সমকালে প্রকাশিত এই সংবাদটি পুরোপুরি সংসদকে পাঠ করে শোনান। একই বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সরকারি দলের প্রধান হুইপ আবদুস শহীদ, আবদুল মান্নান ও অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া বক্তব্য রাখেন। তারা সবাই বিচারপতি মিজানুর রহমান ভুঞার কঠোর সমালোচনা করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে বলেন, সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠন করতে হবে। অন্যথায় দেশের বিচার বিভাগকে রক্ষা করা সম্ভব হবে না।
শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, বিচারপতি তার দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন না থেকে রাজনৈতিক দলের কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন। জামায়াতের পক্ষ নিয়ে তিনি ব্লগার রাজীবকে মুরতাদ বলেছেন। তিনি বলেন, রাজীব হত্যায় ওই বিচারপতি জড়িত কি-না জানার জন্য তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। রাজীবের মৃত্যুর পর তার আইডি হ্যাক করে মারাত্মক সব অপপ্রচার চালানো হয়েছে। এই বিচারপতি তাদের হয়ে কাজ করেছেন। শাহবাগের আন্দোলনকে নস্যাৎ ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগাতে এসব প্রচারণা চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, এই বিচারপতি সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। তাকে অপসারণ করতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আলোচনা করে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠনের জন্য তিনি আইনমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান।
আবদুস শহীদ বলেন, বিচারপতি মিজানুর রহমান ভুঞা ধৃষ্টতাপূর্ণ কাজ করেছেন। আজ সংসদে যে দাবি উঠেছে, সংসদীয় পদ্ধতি অনুসরণ করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়াও সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠনের দাবি জানিয়ে বলেন, এ ঘটনা বিচার বিভাগের জন্য কলঙ্কজনক ঘটনা। একজনের কুকর্মের জন্য বিচার বিভাগ নষ্ট হতে পারে না।
আবদুল মান্নান বলেন, স্বাধীনতার চেতনায় উজ্জীবিত ও নৃশংসভাবে খুন হওয়া একজন যুবকের বিরুদ্ধে মহানবীকে (সা.) জড়িয়ে কুৎসিত মন্তব্য করা হয়েছে। এতে দেশের সাধারণ সরলপ্রাণ মুসলমানের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই বিচারপতি রাজনৈতিকভাবে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে নিয়োগ পেয়েছেন। নিজের চেয়ারকে ব্যবহার করে তিনি ক্ষমার অযোগ্য কাজ করেছেন। তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে।
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, সংগ্রামসহ কয়েকটি জামায়াত সমর্থিত পত্রিকায় রাজীবকে জড়িয়ে মহানবীর (সা.) বিরুদ্ধে কুৎসা রটানোর এই বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে। একজন কর্তব্যরত বিচারপতি এ প্রচারণার কাজে যুক্ত হয়ে অন্যায় ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি। তিনি ১৯৭২ সালের সংবিধানের মতো বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নেওয়ারও দাবি করেন।
আইনমন্ত্রীর আশ্বাস : সাংসদদের দাবি প্রসঙ্গে সংসদে আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, রাজীবকে বিতর্কিত করতে ইনকিলাব ও আমার দেশসহ কয়েকটি পত্রিকায় এই অপপ্রচার চালানো হয়েছে। এই পত্রিকাগুলোর ভূমিকা সম্পর্কে আমরা জানি। তারা নিজেরাও তৈরি খবর প্রকাশ করতে পারে। রাজীব এমন কাজ করতে পারে না। তিনি বলেন, একজন বিচারপতি হয়ে তিনি যে কাজ করেছেন, তা জঘন্য ও নিন্দনীয়। তিনি অসদাচরণ করেছেন। রাষ্ট্রপতির ক্ষমতানুযায়ী তিনি প্রধান বিচারপতিকে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠন করতে বলতে পারেন। আইনমন্ত্রী বলেন, তিনি বিষয়টি প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আলোচনা করে সংবিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।
আইনজীবীদের ক্ষোভ : এদিকে গতকাল দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের দক্ষিণ হলে আয়োজিত এক জরুরি সাধারণ সভায়ও বিচারপতি মো. মিজানুর রহমান ভুঞার বিরুদ্ধে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠন করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ব্যানারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সহ-সভাপতি কেএম সাইফুদ্দিন আহম্মেদ। বক্তব্য রাখেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল বাসেত মজুমদার, এএফএম মেসবাহউদ্দিন আহমেদ, বঙ্গবন্ধু হত্যা ও জেলহত্যা মামলার প্রধান আইনজীবী আনিসুল হক, সমিতির সাবেক সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম, সমিতির সাবেক সহসম্পাদক সৈয়দ মামুন মাহবুব প্রমূখ।
সভায় অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলে তিনি আর কোনো দলের থাকেন না। যারা পদে আসীন হয়ে দলের প্রতি আনুগত্য দেখান, তাদের বিচারপতি পদে থাকার অধিকার নেই। তিনি অবিলম্বে পদ ছেড়ে দিলে বিচার বিভাগ বাঁচবে।
এএফএম মেসবাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, তার আর ওই পদে থাকার যোগ্যতা নেই। অভিযুক্ত বিচারপতির বিরুদ্ধে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠনের পর নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আইনজীবীদের তার কোর্ট বর্জন করতে হবে।
অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেন, ওই বিচারক স্বাধীন বিচার বিভাগকে কলুষিত করার জন্য জঘন্য কাজ করেছেন।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, বিচারপতি মিজানুর রহমান ভুঞার বিরুদ্ধে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠন করে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এর আগে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার একেএম শামসুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে প্রধান বিচারপতি ওই বিচারপতিকে (মিজানুর রহমান ভুঞা) সোমবার রাতেই তলব করেছিলেন। পরে তিনি প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বলেও জানান সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার।
মো. মিজানুর রহমান ভুঞা ২০০২ সালে বিএনপি-জামায়াত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে হাইকোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। এর দুই বছর পর ২০০৪ সালের ২৯ জুলাই তিনি বিচারপতি হিসেবে স্থায়ী নিয়োগ লাভ করেন। —
A Short Description about youself


Any feedback, questions or ideas are always welcome. In case you are posting Code ,then first escape it using Postify and then paste it in the comments
0 comments: