টাঙ্গাইল শহরের একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আগুন দিয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এতে একজন নিহত ও ১১ জন আহত হয়েছেন। নিহতের পরিচয় জানা যায়নি। আশঙ্কাজনক অবস্থায় চারজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আগুনে পুরো কেন্দ্রটি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা দমকল বাহিনীর ওপরও হামলা চালায় এবং তাদের দু’টি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। গতকাল শনিবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নাম কসমস কম্পিউটার সিস্টেম। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধিভুক্ত কেন্দ্রটির কোড নম্বর-৫৪০৬৭। প্রতিষ্ঠানের পরিচালক শওকত হোসেন ইমরান জামায়াতে ইসলামীর একজন সমর্থক বলে জানা গেছে। তিনি মওলানা ভাসানী প্রতিষ্ঠিত খোদা-ই-খেদমতগারের জেলা কমিটির সেক্রেটারি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল সোয়া ৪টার দিকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মেইন রোডের দলীয় কার্যালয় থেকে পতাকা মিছিল বের করেন। নিরালা মোড় ঘুরে তারা ভিক্টোরিয়া রোডের ইয়াসিন সুপার মার্কেটের দোতলায় অবস্থিত কসমস কম্পিউটার সিস্টেমে ঊঠে কয়েকজন মিছিলকারী পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে ছয়টি কক্ষের সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুন নেভাতে এলে তাদের ওপরও হামলা চালানো হয়।
টাঙ্গাইল ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আতাউর রহমান বলেন, আমরা খবর পেয়ে সাথে সাথে ঘটনাস্থলে এসে দেখি লাঠিসোটা ও পতাকা হাতে বেশ কিছু লোক মিছিল করছে। আমরা আগুন নেভাতে গেলে তারা আমাদের ওপর হামলা চালান এবং দু’টি গাড়ির লুকিং গ্লাস ভেঙে ফেলেন। লাঠির আঘাতে আমাদের তিনজন আহত হন। পরে পুলিশ আসার পর আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়। দীর্ঘ ৩৫ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। সেখান থেকে একটি লাশ উদ্ধার করা হয় এবং টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয় আটজনকে।
ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মফিদুল ইসলাম বলেন, প্রথমে আমাদের বাধা দেয়া না হলে হয়তো লোকটি মারা যেত না আর এত ক্ষতিও হতো না।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের আরএমও রফিকুল ইসলাম জানান, অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় আটজনকে হাসপাতালে আনা হয়। তারা হলেন শুভ হাসান, মোহাম্মদ শুভ, শহীদ সিদ্দিক, বাবু, রবিন হোসেন, রবিন মিয়া, সবুজ ও মাহবুব। তাদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথম চারজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত সবার বাড়ি শহরের বিভিন্ন এলাকায়।
কসমস কম্পিউটার সিস্টেমের পরিচালক শওকত হোসেন ইমরান বলেন, আমি বাড়ি থেকে আগুন লাগানোর খবর পেয়ে সাথে সাথে ফায়ার সার্ভিসকে জানাই। কিন্তু ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আসতে দেরি করেন। আমি এসে দেখি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা প্রতিষ্ঠানের সামনে লাঠিসোটা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তারা আমাকে ধাওয়া করলে আমি নিরাপদ স্থানে চলে যাই। পরিচালক বলেন, হামলাকারীরা শিক্ষার্থীদের বের করে দিয়ে ভাঙচুর করে আগুন দেয় বলে একজন শিক্ষার্থী জানিয়েছে।
সহকারী পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, কিভাবে আগুন লেগেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ভেতর থেকে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে এবং আহত আটজনকে প্রথমে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে চারজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

Any feedback, questions or ideas are always welcome. In case you are posting Code ,then first escape it using Postify and then paste it in the comments
0 comments: